তদন্তে নামছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)
রোহিঙ্গাদের দেশত্যাগে বিরল ছবি |
বিরল এক আদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) বলেছেন, রোহিঙ্গাদের দেশত্যাগে বাধ্য করার ঘটনা নিয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে তদন্ত করে রায় দেওয়ার এখতিয়ার তাদের রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার হেগের আদালতের প্রাক-বিচার চেম্বারে (প্রি-ট্রায়াল চেম্বার) এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছে রয়টার্স ও এএফপি। আইসিসির এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর ফলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের পথ উন্মুক্ত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত মাসে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের স্বাধীন তথ্যানুসন্ধান কমিশনও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
হেগের তিন বিচারপতির এই আদালত লিখিত সিদ্ধান্তে বলেছেন, 'রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দেশছাড়া করার মাধ্যমে তাদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করার যে অভিযোগ উঠেছে, সে ব্যাপারে আদালতের (বিচারের) এখতিয়ার রয়েছে। এর কারণ হচ্ছে আন্তঃসীমান্ত এই অপরাধের একটি অংশ একটি সদস্য দেশে (বাংলাদেশে) সংঘটিত হয়েছে।'
আদালত বলেছেন, 'আইসিসি স্ট্যাটিউটের ৫ ধারায় বর্ণিত অপরাধ, যেমন নিপীড়নের মতো মানবতাবিরোধী ও অন্যান্য অমানবিক অপরাধের বিষয়ে আদালত তার এখতিয়ার প্রয়োগ করতে পারেন।'
এখন এ বিষয়ে আইসিসি তদন্ত শুরু করবে। এ নিয়ে মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ হতে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। বৃহস্পতিবারের এই আদেশের ফল সুদূরপ্রসারী হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে কোনো দেশ আইসিসির সদস্য না হলেও মানবতাবিরোধী ও গণহত্যার অভিযোগে সে দেশের সংশ্নিষ্টদের বিচার করার পথ সুগম হতে পারে এই আদালতের সামনে।
আইসিসির সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও মিয়ানমারের ওপর আইসিসির বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে কি- না সে বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত চেয়ে গত এপ্রিলে আবেদন করেছিলেন এই আদালতের প্রসিকিউটর ফেতু বেনসুদা। আদালত তার আবেদন আমলে নিয়ে প্রথমে বাংলাদেশের মতামত জানতে চান। বাংলাদেশ বলেছে, এ দেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে আইসিসির পূর্ণ এখতিয়ার আছে।
আদালতের অনুমতি নিয়ে বেশ ক'জন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবীও বলেছেন, আইসিসির বিচারিক এখতিয়ার রয়েছে। এরপর আদালত তার প্রসিকিউটরকে এ বিষয়ে মিয়ানমারের মনোভাব জানার সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।
কোন প্রেক্ষাপটে মিয়ানমার থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসতে বাধ্য হয়েছে এবং আইসিসির সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও মিয়ানমারের ওপর বিচারিক এখতিয়ার আছে কি-না সে বিষয়ে ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে জানাতে নেপিদোকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন বেনসুদা। আইসিসি অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠালেও মিয়ানমার তা গ্রহণ করেনি এবং আদালতকে কোনো জবাবও দেয়নি। এরপর ৯ আগস্ট মিয়ানমার সরকার পাঁচ পৃষ্ঠার এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মিয়ানমারের ওপর আইসিসির কোনো এখতিয়ার নেই। তাই আইসিসির অনুরোধের জবাব দেওয়ার কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে বলেও মিয়ানমার মনে করে না।
জানা গেছে, মিয়ানমারের ওই গণবিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ আগস্ট বেনসুদা একটি লিখিত আবেদন উপস্থাপন করেন। সেখানে তিনি জানান, বিচারিক উদ্যোগ সম্পর্কে মিয়ানমার অবগত হয়েছে এবং দেশটি জ্ঞাতসারেই এ প্রক্রিয়ায় অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই মিয়ানমারের গণবিজ্ঞপ্তি আদালতের আমলে নেওয়া ঠিক হবে না।
0 comments:
Thanks for visit my website. Feel free discussion from my any post and I will happy for suggestions.