Tuesday, August 28, 2018

‘সেনা কর্মকর্তাদের মদদেই রোহিঙ্গা গণহত্যা’

মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি'র সাথে দেশটির সেনাপ্রধান। - ছবি: বিবিসি
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রাখাইন অঞ্চলে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।
মিয়ানামারের রোহিঙ্গা মুসলমান এবং অন্যান্য নৃ-তাত্ত্বিক সংখ্যালঘুদের উপর গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেশটির সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করেছে জাতিসংঘের একটি তদন্ত প্রতিবেদন।
জাতিসংঘের ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেশটির শীর্ষ ছয়জন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত এবং বিচার হওয়া দরকার।
কয়েকশ' মানুষের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে রোহিঙ্গাদের উপর সহিংসতার বিষয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করে জাতিসংঘ, যা সোমবার প্রকাশ করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে জাতিসংঘের দিক থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কঠোর ভাষায় নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে।
রাখাইন অঞ্চলে প্রকৃত নিরাপত্তা ঝুঁকির তুলনায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ অনেক বেশি অসম ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের শীর্ষ ছয়জন সামরিক কর্মকর্তার বিচার হওয়া প্রয়োজন। রোহিঙ্গাদের উপর সহিংসতা থামানোর জন্য হস্তক্ষেপ করতে ব্যর্থ হওয়ায় মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি'র কড়া সমালোচনাও করা হয়েছে এ প্রতিবেদনে।
এছাড়া, ঘটনা বিচারের জন্য বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানোর জন্য আহবান জানানো হয়েছে জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনে।
মিয়ানমারের সরকার বরাবরই বলেছে যে রাখাইন অঞ্চলকে জঙ্গিদের ঝুঁকি মুক্ত করার জন্য সুনির্দিষ্ট অভিযান চালানো হয়েছে।
এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সামরিক প্রয়োজনে নির্বিচারে হত্যা, গণ-ধর্ষণ, শিশুদের উপর হামলা এবং পুরো গ্রাম জ্বালিয়ে দেবার বিষয়টি কখনো সমর্থনযোগ্য হতে পারে না।’
মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগ তদন্ত করার জন্য ২০১৭ সালের মার্চ মাসে জাতিসংঘ একটি নিরপেক্ষ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গঠন করে।
ওই বছরের অগাস্ট মাসে রাখাইন অঞ্চলে সেনাবাহিনীর ব্যাপক অভিযানের আগেই এটি গঠন করা হয়। মিয়ানমারের ওই অভিযানের ফলে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
এ প্রতিবেদনে রাখাইন অঞ্চল ছাড়াও মিয়ানমারের কাচিন এবং শান অঞ্চলের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
ওইসব এলাকায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্রও উঠে এসেছে জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনে।
গত বছরের অগাস্ট মাসের ২৫ তারিখের পর থেকে সাত লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
জাতিসংঘের গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন অবশ্য মিয়ানমারে ঢুকতে পারেনি।
কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ, স্যাটেলাইট ইমেজ, ছবি এবং ভিডিও'র উপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে মিয়ানমারের যে শীর্ষ ছয় সেনা কর্মকর্তাকে এসব ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনীর প্রধান মিং অং হ্লাইং।

আরো পড়ুন মিয়ানমার সেনাপ্রধানকে নিষিদ্ধ করল ফেসবুক

Previous Post
Next Post
Related Posts

0 comments:

Thanks for visit my website. Feel free discussion from my any post and I will happy for suggestions.